জাতীয় দলের সাবেক ক্রিকেটার ও বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) পরিচালক আকরাম খানের বাসার গৃহকর্মী মোসাম্মৎ সাহিদার (২৫) মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। রোববার মধ্যরাতে রাজধানীর মহাখালী ডিওএইচএসে আকরাম খানের বাসার কাছেই অচেতন অবস্থায় পড়েছিলেন সাহিদা। এ ঘটনায় সাহিদার ভাই ইউসুফ আলী বাদী হয়ে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) কাফরুল থানায় অপমৃত্যুর মামলা করেছেন।
জানা গেছে, সাহিদার বাড়ি সিতাকুণ্ড পৌরসভার ২ নম্বর ওয়ার্ডের পন্থিছিলা এলাকার মহাদেবপুর গ্রামে। তার বাবা একজন কৃষক। বড় বোন রাসেদা বেগম জানান, ১৩ বছর ধরে আকরাম খানের বাসায় কাজ করছিলেন সাহিদা বেগম। এ সময়ের মধ্যে অত্যাচার-নির্যাতনের কোনো অভিযোগ কখনো জানায়নি সে। বরং মামা-মামি (আকরাম খান দম্পতি) অনেক স্নেহ করতেন।
তবে সাহিদা আত্মহত্যা করেছে নাকি তাকে হত্যা করা হয়েছে এ বিষয়টি সোমবার পর্যন্ত নিশ্চিত হতে পারেনি পুলিশ। কাফরুল থানার ওসি মো. হাফিজুর রহমান বলেন, রবিবার রাত ১১টার দিকে ডিওএইচএস তিন নম্বর রোডের দুটি ভবনের মাঝে নিচে পড়েছিল সাহিদার নিথর দেহ। কীভাবে তার মৃত্যু হয়েছে তা নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না। ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন পাওয়ার পরই বিষয়টি স্পষ্ট হবে।
তিনি বলেন, ছয়তলা ভবনের পাঁচ ও ছয়তলা ডুপ্লেক্স বাসায় থাকেন আকরাম খান। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, ছয়তলার ছাদ থেকে নিচে পড়ে মারা যান সাহিদা। মরদেহ বাসার পেছনে পাওয়া যায়। পেছনেও আরেকটি ভবন আছে। অর্থাৎ, দুই ভবনের মাঝে পড়েছিল মরদেহ। সাহিদার বাঁ হাত ভাঙা এবং শরীরে কিছু জখম দেখা গেছে জানিয়ে ওসি বলেন, ময়নাতদন্তের পর নিশ্চিত হওয়া যাবে আসলে কী হয়েছে। পুলিশ বিষয়টি তদন্ত করছে।
আকরাম খান সাংবাদিকদের বলেন, সাহিদা তার বাসায় ১৪ বছর ধরে কাজ করছে। ঘটনার দিন রবিবার তার স্ত্রী ও মেয়ে বাইরে গিয়েছিল। বাসায় খেলা দেখছিলেন তিনি। বাসায় গৃহকর্মী আছে মোট চারজন। তার স্ত্রী ও মেয়ে ফেরার পর একজনকে খুঁজে পাচ্ছিল না। অনেক খোঁজার পর দেখা যায় সাহিদা ওখানে পড়ে আছে। সঙ্গে সঙ্গেই পুলিশকে ঘটনাটি জানান তিনি।
আকরাম খানের গাড়ির ড্রাইভার জয়নাল বলেন, রবিবার বিকেলে ম্যাডাম, তার মেয়ে ও খালাকে নিয়ে গুলশানে শপিংয়ে গিয়েছিলাম। বাসায় ফিরি রাত ১০টার দিকে। এ সময় সাহিদাকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না। পরে জানতে পারি সে দুই ভবনের মাঝখানে পড়ে আছে। তিনি বলেন, ১৯৯৮ সাল থেকে আকরাম স্যারের গাড়ি চালাই। সাহিদাকে অনেক দিন ধরেই চিনি। কখনো খারাপ কিছু দেখিনি। আকরাম স্যারের মেয়ে আতিফাকে দেখাশোনা করত সাহিদা। তার সঙ্গে ম্যাডামকে কখনো খারাপ ব্যবহারও করতে দেখিনি।